TIE SPEAKS

TIE Speaks is a new web based magazine from the NGO Theatre in Education. The aim is to address and discuss different topics of art and culture through pieces written by different acclaimed people from different arena. We want to ensure that the write ups are neither the 'all informative cliche' type, nor the 'all discussion boring' type. We are creating something exciting which has the capability of entertaining a mind while making one think and grow. Give it a look and cheer us through your loving support.

থিয়েটার - সদিচ্ছা প্রকাশের হাতিয়ার


       থিয়েটার - সদিচ্ছা প্রকাশের হাতিয়ার


  

 ঈপ্সিতা চক্রবর্তী



থিয়েটার তো শুধু নকলনবিশি নয়ভিতরের মানুষটাকে বাইরে আনা নিজের মুখোমুখি হওয়া নিজেকে চেনাও তাই বড়দের থিয়েটার, ছোটদের থিয়েটারবড়দের জন্যছোটদের জন্যবড়দের গল্প ছোটদের গল্প এসব ভাগও আমি মানিনা মানিনা বড়দের জীবন জটিল আর ছোটদের সহজএসব সরলীকরণও এসব বলে আসলে ছোটদের জগৎটাকে কমিয়ে দেখা আমাদের অভ্যেস করানো হয় চারপাশে যা কিছু ঘটে চলে তা নিয়ে নিজের মনে যা কিছু জমে তাই তো থিয়েটারে বলতে চায় ছোটরা নিজের আত্মপ্রকাশ আর বাইরের দুনিয়ার আত্মীকরণ দুই-এরই মাধ্যম তাই থিয়েটার
সাইকোলজি বা মনোবিজ্ঞানের আলোচনায় ব্যক্তিত্বের বিকাশ ( personality development), যৌথ সমাজজীবন (collective growth)আর দল  নেতৃত্ব (group psychology and leadership) অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিয়ে আছে
দলের ঘরে  ছোট-বড় নানা কাজ করা, back stage থেকে অভিনয়দলের show-এর দিন মালপত্র টানা বা counter- বসা সবই শেখায় অতি আত্মকেন্দ্রিকতা (যেটা এই সময়ের বড় অসুখছেড়ে যৌথতাসবার স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়াশেখায় সময় মত rehearsal- আসার নিয়মানুবর্তিতা
সঙ্গে সঙ্গে বিকাশ হয় ব্যক্তিত্বেরও স্টেজে উঠে হাত দুটো কোথায় লুকাবো এই সংকোচ কাটিয়ে ধীরে ধীরে মাথায় ঢুকে যায় চরিত্রের গভীরে মেশার দায়বদ্ধতাসঙ্গে দলের ভাবনা, production-টার ভাবনাটা সবার সঙ্গে বিনিময় করার দায়বদ্ধতাওগড়ে ওঠে communication skill
দলের ঘরে বড়রা মেতে ওঠে বিতর্কেছোটরা অবাক চোখে তাকিয়ে শোনেশুধু কি ঝগড়া আর দলবাজি শেখে? না শেখে form আর content নিয়ে  কত কিশেখে ভিনদেশী স্তানিস্লাভস্কিব্রেশট থেকে শম্ভু মিত্র আর কেয়া চক্রবর্তীর জীবনময় থিয়েটার-এর কথা  শেখে ----/--- এর উচ্চারণ আর দম ধরে রাখাশেখে চোখের ভাষা বদলাতে আর মুখের মাংসপেশির নরম গতিময়তাকতকিকতকি!
রিহার্সাল সেরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে আমার মেয়ে আমায় জিজ্ঞেস করে, "কবির লড়াই আর যাত্রাকেও কি থিয়েটার বলতো?" জিজ্ঞেস করে কেন অন্ধকার হলঘর আর উঁচু আলোকিত মঞ্চ ছেড়ে রাস্তায়হাটে, মাঠেভিড়ের মাঝে নেমে এলো থিয়েটার?  শুনে ফেললো চারপাশে যা কিছু খারাপঅপছন্দের সেগুলোকে বদলানোর কথাও বলে থিয়েটার জেনে ফেললো সমাজের অন্যায়ের কথা থিয়েটার করে বলতে গেছিলো বলে সফদার হাসমি বলে একজন মানুষকে খারাপ লোকেরা মারতে মারতে মেরেই ফেলেছিল সে গুণ্ডামি করতো নাপার্টির মিছিলে যাচ্ছিলো নাথিয়েটার করছিলো বলে মরে গেলো
সাইকোলজির প্রয়োগ বা application-এর দিকটা হলো থেরাপি, psychotherapy বা counselling এখন সবাই শুনছেতার একটা জায়গা art therapy, Drama therapy- এখন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিচ্ছে Therapy যদি সহজ কথায় হয় ভালো থাকতে সাহায্য করামনের কষ্ট কমানো তাহলে গুরুত্ব দিতে হবে মানুষেরছোটদের সৃষ্টিশিলতা বা creativity- বিকাশকে, প্রকাশকে আমাদের আদরের সুকুমার রায় শিখিয়ে গেছেন ছোটদের আপাত আবোলতাবোলকল্পনার জগৎটাকে অবহেলা করা বোকামিসেখানে থাকে কত স্তরকত নতুনের সম্ভাবনাবাইরে আসার রাস্তা করে দিলে সেগুলো আধমরাদের ঘা মেরে বাঁচাবেবড়দের একঘেয়ে চিন্তাগুলোকে বদলে দেবে আঁকতে বসে আমার মেয়ে আকাশের গায়ে হলুদ রং বুলিয়েছিলো বলে হাঁ হাঁ করে করে উঠেছিলাম। পরে একদিন এক অনন্য পাগল শিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যানগঘের ছবি ক্যালেণ্ডারে দেখে  বলে উঠেছিলো "ওই দেখো মা আকাশে হলুদ দিয়েছে", লজ্জায় ওর থেকে মুখ লুকিয়েছিলাম আমি!
বেশ কয়েক বছর আগে psychology- conference-মনোবিজ্ঞানের একটি একাডেমিক আলোচনায় একজন গবেষক উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে ছিলেন - কাশ্মীরের ছোট ছোট বাচ্চাদের mental health বা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করতে গিয়ে উনি দেখেছিলেন ছোট থেকে বিস্ফোরণরক্ত, রাত-বিরেতে বাড়িতে ঢুকে মিলিটারির তল্লাশি এসব অনেক শিশুকেই আতঙ্কে মূকভাষাহীন করে দিয়েছে চুপ করে থাকে তারা অজানা ভয়ে রাত্রে কেঁদে ওঠেবিছানা ভেজায় অনেক ভেবে ছোট ছোট দলে ওদের থিয়েটারে ডেকে আনেন ওই গবেষক  তার বন্ধুরাফল মিলেছিলো অচিরেইকথা আর হাসি ফিরে এসেছিলো ওদের মুখে
জিতে যায় মানুষের সদিচ্ছে,  হাতিয়ার হয় থিয়েটার।।


No comments

Thanks for your comment

Powered by Blogger.